সবাই সারাজীবন একটা মনের মানুষ খুঁজে বেড়ায়। কিন্তু কোন মানুষই কারো মনের মত হয়.....সম্পর্কের বন্ধন | samparker Bandhan
সম্পর্কের বন্ধন
আমার একজন শিক্ষক একবার একটা কথা বলেছিলো আমাকে, তুই যদি আমাকে বাদ দিয়ে অন্য শিক্ষকের কাছে পড়িস,তাহলে আসে পাশে সবাই ভাববে নিশ্চয়ই আমিই খারাপ ।
আবার কিছুদিন পর নতুন শিক্ষকেও যদি বাদ দিয়ে দাও তাতেও মানুষ ভাববে হয়তো এই শিক্ষকটাও ভাল না!
কিন্তু তারপর আবার নতুন কোন শিক্ষক রেখে তাকেও যদি বাদ দাও, তাহলে কিন্তু সমস্যাটা তোর; শিক্ষকদের না!
কী বুঝলেন না তো আমি কোন প্রসঙ্গে এই কথা বলছি!
হ্যাঁ! আমি ছেড়ে যাওয়ার কথা বলছি, ভালবাসা বিচ্ছেদের কথাও বলছি।
আমরা প্রায় সবাই সারাজীবন একটা মনের মানুষ খুঁজে বেড়ায়। কিন্তু কোন মানুষই কারো মনের মত হয় না। এর সাথে ভালো লাগছে না তো ওর সাথে থাকি; আবার ওর সাথে ভালো লাগছে না তো এর সাথে থাকি। এই ভাবনাটা প্রচন্ড রকমের ভুল। যে মানুষটাকে ভুল ভেবে চলে আসছেন তার থেকেও বড় ভুল আবার অন্যের কাছে যাওয়া!
সবাই কিন্তু টেনশনে সিগেরেট খায় না।
আবার কেউ মাথা ব্যাথা ছাড়াই দু'বেলা চা খায়। কোন স্বাদ ও নেই, কোন উপকার ও নেই মুড়ির মধ্যে তবুও সকালে রোজ রোজ মুড়ি খাই।
সকালের চা এক-এক দিন এক-এক রকম হয়,মাঝেমাঝে খারাপ ও হয়; তাও কেউ চা খাওয়া ছাড়ে না। ঘরে কখনো কখনো দু,তিন দিন মুড়ি থাকে না;তবুও আমরা মুড়ি খাওয়ার অভ্যাস বদলাতে পারি না। মৃত্যুর ঝুঁকি থাকলেও সিগারেট ছাড়া যায় না।
এইগুলো অভ্যাস! যেটা জীবনকে জীবনের শেষ অব্দি নিয়ে যায়।
আর মনের মানুষ,মনের মিল আর প্রচন্ড ভালবাসা জীবনকে জীবনের শেষ অব্দি নিয়ে যেতে পারে না।
হুমায়ুন ফরিদীর কিন্তু মনের মানুষ, মনের মিল আর প্রচন্ড ভালবাসা ছিল সুবর্না মোস্তফার জন্য!
একবার হুমায়ুন ফরিদীর আর সুবর্না মোস্তফার প্রচন্ড রকমের ঝগড়া হয়। ঝগড়া শেষে সুবর্না মোস্তফা দরজা বন্ধ করে একটা ঘরে সারারাত নিজেকে আটকিয়ে রাখেন।
পরদিন সকালে গিয়ে দেখে, যে ঘরটায় তাদের ঝগড়া হয়েছিলো ওই ঘরের মেঝে থেকে ছাদ অব্দি শুধু একটাই লিখা, "সুবর্না! আমি তোমাকে ভালবাসি"।
কিন্তু এত প্রচন্ড ভালবাসায় ও তাদের সংসারটা টিকে থাকেনি শেষ অব্দি। শেষে বিচ্ছেদ হয়।
কিছুদিন আগে একটা মেয়ের সাথে রিলেশনে ছিলাম, দুজনের দুজনের মনের মানুষ, মনের মিল ও প্রচন্ড ভালোবাসা থাকলেও দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে রাখতে পারিনি,কোনো এক অজানা কারণে হারিয়ে গেলাম দুজন দুজনের থেকে।
আসলে সত্যি এইটাই, মনের মানুষ, মনের মিল আর প্রচন্ড ভালবাসা হলেই একসাথে থাকা যায় না। এই পৃথিবীতে যারাই জীবনের শেষ অব্দি একসাথে ছিল তারা শেষ পর্যন্ত কিন্তু কোন কারন ছাড়াই একসাথে ছিলো।
আমার ঠাকুমার কাছে একদিন গল্প শুনতে বসেছিলাম,তখন ঠাকুমাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, "ঠাকুমা তোমার সাথে দাদু মনের মিল ছিল বা ভালোবাসা ছিল?"
তখন উত্তরে ঠাকুমা বলেছিল,"আমি তোর দাদুকে চিনতাম না, হঠাৎ আমার বাবা বিয়ে দিয়ে দেয় তোর দাদুর সাথে, আমি চুপচাপ থাকলেও তোর দাদুর সাথে প্রায় ঝগড়া হত,আর ভালোবাসা ওটা কী জিনিস তখন জানতাম না, আমাদের মধ্যে যেমন দুজনের কাছে থেকে যাওয়ার কোনো কারন ছিল না তেমন দূরে যাওয়ার কথা কখনো মাথায় আসেনি।"
বিশ্বাস করুন! শেষের দিকে কোন কারনই ছিল না তাদের একসাথে থাকার। যেভাবে একটি বইয়ের শেষ কয়টি পাতা না পড়ে উঠা যায় না; একইভাবে তারাও আর উঠে আসতে পারেনি শেষের দিকে।
থেকে গিয়েছিলো শেষ অব্দি!
আর শেষ পযন্ত থেকে যাওয়াটাই পবিত্র ভালবাসা!
বেঁচে থাকুক সব পবিত্র ভালোবাসা।
কাহিনী-প্রিয়
ছবিঃসংগৃহিত
কোন মন্তব্য নেই